শঙ্কর সরকার, বাংলাদেশ
১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্ম। একটি শিশুর জন্মের সময় মায়ের যে ভূমিকা বাংলাদেশের জন্মের সময় ভারতের ভূমিকাও সেইরূপ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সেই অতীত অবদানের কথা নতুনভাবে এখানে লেখার প্রয়োজন নেই, তবে আমারা মনে করি হয়ত ভারতের তৎকালীন সরকার মনে করছিলেন পাশাপাশি নেপাল ভুটান শ্রীলঙ্কা আয়তনে, লোকবল অর্থবলে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম হয়ে যদি একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে থাকতে পারে, তবে বাংলাদেশও একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে অবশ্যই থাকবে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণ নিজেদের মত স্বদেশকে গড়ে তুলতে পারবে। অথচ চীন ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট বাংলাদেশের বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবিত থাকাকালীন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি পর্যন্ত দেয় নাই।
সম্প্রতি গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মি: ইয়াও ওয়েন বলেন গত চুয়াত্তর বছরে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) বলিষ্ঠ নেতৃত্বে চীন যুগান্তকারী পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে পথ অতিক্রম করেছে আর সৃষ্টি করেছে দুটি বিস্ময়, বিশ্বের অন্য কোথাও যার জুড়ি মেলা ভার, যেমন দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক স্থিতিশীলতা। চীনা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত সমাজতন্ত্রের পথ ধরে চীনা জনগণ কেবল তাদের মাতৃভূমিকে সুগভীর উন্নয়নমূলক পরিবর্তন সাধন করেনি বরং বিশ্বকে উন্নত করেছে বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন আধুনিকীকরণের চীনা পথে রয়েছে অতুলনীয় জীবনীশক্তি। সর্বক্ষেত্রে একটি মধ্যপন্থী সমৃদ্ধ সমাজ গঠনের প্রথম শতবর্ষী লক্ষ্য অর্জনের পর, চীনা জনগণ এখন চীনকে সর্বক্ষেত্রে একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে তোলার দ্বিতীয় শতবর্ষী লক্ষ্যের দিকে কঠিন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্ব ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতা এবং অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছে তা সত্ত্বেও চীনের অর্থনৈতিক শক্তি নিজস্ব মানদণ্ড সুরক্ষিত রেখে এবং নিজ গুণমানের উন্নতির মাধ্যমে কঠোর চাপের মুখেও টিকে আছে। এ বছরের প্রথমার্ধে চীনের জিডিপি ৫৯.৩ ট্রিলিয়ন আর এম বি ছাড়িয়েছে, যেখানে বছরে প্রবৃদ্ধি ৫.৫ শতাংশ যা গত বছরের ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হারের চেয়ে বেশি এবং একই সময়ের মধ্যে অন্যান্য অনেক বড় উন্নত অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে গেছে। আইএম এফের (IMF) মতে চীনের অর্থনীতি ৫.২ শতাংশ প্রসারিত হবে যা বিশ্ব অর্থনীতির মোট প্রবৃদ্ধির এক তৃতীয়াংশ অবদান রাখবে।
চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ২০১৬ সালে সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হয় এবং ২০১৯ সালে গভীর হয়। সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বৈঠক করেন যেখানে তাঁরা উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অধিকতর উন্নয়নের জন্য কৌশলগত দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। চীন ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের নিজ নিজ মূল স্বার্থ ও উদ্বেগের বিষয়টি একে অপরকে সমর্থন করে। চীন জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় এবং বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধীতায় বাংলাদেশকে সমর্থন করে, যাতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারে এবং উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবন অর্জন করতে পারে। বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে একচীন নীতি অনুসরণ করে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে চীন যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তার প্রশংসা করে। চীন ও বাংলাদেশ যৌথ উন্নয়নের ঘনিষ্ঠ অংশীদার। এই বছর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিঙয়ের হাত ধরে বি আর আই (The Belt and Road Initiative) এর যাত্রার দশম বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হিসেবে বাংলাদেশই প্রথম বি আর আইতে যোগদান করে। গত সাত বছরে বি আর আই বঙ্গোপসাগরে শিকড় গেড়েছে এবং প্রস্ফুটিত হয়েছে। পদ্মা বহুমুখী সেতু এবং এর রেল যোগাযোগে গত আগস্ট পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৯ হাজার ৯৩৩.৫৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রয়েছে। পদ্মা বহুমুখী সেতুতে সর্বমোট ব্যয় হবে ৩৯২৪৬ কোটি টাকা যা বাংলাদেশের যোগাযোগ ও অর্থনীতির জন্য একটি আশীর্বাদ স্বরূপ।
বঙ্গোপসাগরের মোহনায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের মাধ্যমে উভয় পাশের যোগাযোগের ৩ থেকে ৪ ঘন্টার দূরত্ব ৫ মিনিটেই শেষ করা সম্ভব হয়েছে। উল্লেখ্য কর্ণফুলী নদীর এই টানেল নদীর তলদেশে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম। তাছাড়া দাশেরকান্দি পয়োশোধনাগার প্রকল্প এবং আরও অনেক এরূপ প্রকল্পের ন্যায় মেগা প্রকল্পগুলি একের পর এক চীন বাংলাদেশে সম্পন্ন করছে যা বাংলাদেশের জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন ও দেশের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। তাছাড়া চীনের ইকোনমিক জোন পাল্টে দেবে বাংলাদেশের অর্থনীতির চিত্র। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বি আর আইয়ের প্রশংসা করে বলেন যে এটি বাংলাদেশের জন্য উন্নয়নের একটি নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ ও চীনের উচিত উন্নয়নের ঐতিহাসিক সুযোগগুলো কাজে লাগানো। উন্নয়ন কৌশলগুলো আরও একীভূত করে উচ্চমাত্রার উন্নয়নের লক্ষ্যে বেল্ট অ্যাণ্ড রোড সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়া এবং একে অপরের পরিপূরক ও সম্পূরক হিসেবে দুই দেশের নিজ নিজ অর্থনৈতিক সুবিধা কাজে লাগানো। বিশেষ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, তথ্য প্রযুক্তি, নতুন জ্বালানি এবং কৃষি। পরস্পরের সমর্থনকারী চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে ভালো ভ্রাতৃপ্রতিম সম্পর্ক। এই বছর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এর প্রস্তাবিত চীন এবং তার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে বন্ধুত্ব, আন্তরিকতা, পারস্পরিক সুবিধা এবং অন্তর্ভুক্তির নীতির দশম বার্ষিকী। এক দশক ধরে চীন এই কুটনৈতিক নির্দেশনা মেনে চলেছে এবং সক্রিয়ভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। দুই রাষ্ট্রের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া বেশি বেশি যোগাযোগের মাধ্যম জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে সৃষ্টি হয়। এই লক্ষ্যে চীন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এবং কর্মী বিনিময়ের বিশাল চাহিদা মেটাতে একাধিক সুবিধামুলক ব্যবস্থা চালু করেছে। আপাতত ঢাকা ও চীনের নির্দিষ্ট শহরগুলোতে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ৫০টি সরাসরি ফ্লাইট চালু করা হয়েছে যার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে ১০ হাজার লোকের যাতায়াত সম্ভব। এই বছর বাংলাদেশস্থ চীনা দূতাবাস এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার, রাজনৈতিক দল, মিডিয়া, থিঙ্কট্যাঙ্ক এবং তরুণদের কয়েক ডজন প্রতিনিধির চীন সফরের ব্যবস্থা করেছে। বিনিয়োগ ও পর্যটনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসা চীনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহের ও চীনা নাগরিকদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় ভারতের অবস্থান চীনের থেকে অনেক সুবিধাজনক অবস্থায়। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্পায়ন ও বাণিজ্য ভারত বাংলাদেশের সাথে চীনের তুলনায় অনেক বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশে যখন তোফায়েল আহমেদ শিল্প মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন তখন ভারতের চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসেন এবং তারা বাংলাদেশে টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিকস, সিমেন্ট, রড, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন এবং তখন বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন ভারত না থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন হত না। তিনি বলেছিলেন ‘ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আসলে প্রয়োজনবোধে আলাদা জোন করে দেওয়া হবে’। বিষয়টি ভারতের আবার বিবেচনা করা দরকার কারণ ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাবেক ব্রিটিশ আমলের রেলপথ, সড়কপথ, নৌপথে, আকাশপথে সব ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উদ্বোধন করেছেন।
বাংলাদেশের উন্নয়নের ব্যাপারে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক ভিত্তিক যাহা বিবিধ কঠিন চুক্তি অনুযায়ী সীমাবদ্ধ কিন্তু ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক দ্বিপাক্ষিক যৌথ উন্নয়নের অংশীদারিত্ব মূলক এবং কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারত নেপাল ভুটান চতুর্দেশীয় উন্নয়নমূলক। এই সকলের ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান এই চার দেশের রেল যোগাযোগ নেটওয়ার্ক একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে যার বাস্তবায়ন হলে এই চার দেশের মধ্যে রেলপথে শুধু জনগণের চলাচল শুরু হবে তাই নয় মালামাল পরিবহন ক্ষেত্রে ঘটবে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এবং এই দেশগুলি জিডিপি বৃদ্ধির ভূমিকা রাখবে এবং এই বিষয়ে বাংলাদেশের সকল জাতীয় পত্রিকায় গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য ইতিমধ্যে এই চার দেশ সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে কানেক্টিভিটি নেটওয়ার্ক গড়ে অনেক নতুন নতুন রুট চালু করার জন্য দ্বিপাক্ষিক ও চার দেশের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা কাজ করছেন। সম্প্রতি গত ১লা নভেম্বর ২০২৩ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের রাজধানী নিউদিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একই সময়ে ভারতের সহায়তায় তিনটি অতি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন এবং উভয় দেশের পরস্পরের মধ্যে সম্পর্ক আপাতদৃষ্টিতে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে যার লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত আধুনিক সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশে রূপান্তরিত করতে বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনটি প্রকল্প হচ্ছে আখাউড়া থেকে ভারতের আগরতলা পর্যন্ত রেলওয়ে সংযোগ, খুলনা থেকে মঙলা বন্দর পর্যন্ত রেলওয়ে সংযোগ এবং মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্লান্টের দ্বিতীয় ইউনিট। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পগুলি উদ্বোধন করতে এক বক্তৃতায় বলেছেন এই তিন প্রকল্প দুই দেশের জনগণের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে। মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট আরও সাশ্রয়ী মূল্যে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ প্রদান করার মাধ্যমে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে অন্যান্য ব্যয়বহুল উৎসের ওপর থেকে বাংলাদেশের নির্ভরতাকে কমিয়ে দেবে এবং পাশাপাশি সাশ্রয়ী ও নির্ভরযোগ্য নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। আখাউড়া আগরতলা রেল যোগাযোগ বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের মধ্যে এবং বিশেষভাবে ভারতের উত্তর-পূর্ব প্রদেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধি, শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করবে। আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মঙলা সমুদ্র বন্দর এবং চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যাতে ভারতের জনগণ ব্যবহার করতে পারে সেজন্য বাংলাদেশ সরকার উন্মুক্ত করে দিয়েছে বলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের যে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হয়েছে সেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছোট বড় মাঝারি ও মেগা-প্রকল্প সব মিলিয়ে যে উন্নয়নমূলক অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে সেখানে দাতা দেশ হিসেবে এবং লোন সহায়তাকারী দেশ হিসেবে উভয় ক্ষেত্রে ভারতের অবদান সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ মৈত্রী তেল পাইপলাইন প্রকল্প, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫ তম অর্থনৈতিক শক্তি। ২০০৬ সালে দেশের চরম দারিদ্র্যের হার ছিল ২৫.১ শতাংশ এখন ২০২৩ সালে ৫.৬ শতাংশ নেমে এসেছে। মাথাপিছু আয় ২০০৬ সালে ছিল ৫৪০ মার্কিন ডলার এখন ২০২৩ সালে ২৭৬৫ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে একটি সমৃদ্ধ উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এই উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি ভারতের অব্যাহত সহযোগিতা বিশাল অবদান রেখেছে এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কৃতজ্ঞতার সাথে তা স্মরণ করেছেন।