সুদীপ কুমার আচার্য্য
স্মরণাতীত কাল থেকে পৃথিবীর ইতিহাসে নাগরিক সভ্য সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের একাংশ মানবতার সদা জাগ্রত সৈনিক হিসেবে তাদের কর্তব্য পালন করে আসছেন। কোনটি ন্যায়/অন্যায় বা সমাজের জন্যে অশুভ সে নিয়ে তাদের প্রতিনিয়ত মাথাব্যথাই বোধকরি সমাজকে উজানের পথে ঠেলে নিয়ে চলেছে; সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দূরে রেখেছে নানান বিরূপতাকে আরও স্পষ্ট করে বললে প্রগতিশীল সুসভ্য চেতনাকে বাদ দিলে সংস্কৃতির আধার প্রায় ফাঁপা হয়ে যায়। সমাজ সংস্কৃতিকে সাজাতে গ্রহণযোগ্য ও পরিশীলিত করে তুলতে সভ্য সমাজের কোন বিকল্প হয় না। এরিস্টোটলের পলিটিক নামক গ্রন্থে নাগরিক সমাজ বলতে কয়নোনিয়া পলিটিকে শব্দটি প্রথম আলোচিত হয় । তিনি গ্রীক পলিসের সভ্য নাগরিকদের বোঝাতে এ শব্দ ব্যবহার করেন । পরে রেনেসাঁ আমলের ইন্টেলেকচুয়াল মানবতাবাদী রাজনৈতিক ইতালিয় ঐতিহাসিক লিওনার্দো ব্রুনি (১৩৭০–১৪৪৪) উপরোক্ত শব্দটির অনুবাদ স্বরূপ civil society কথাটি ব্যবহার করেন এবং ক্রমশ নাগরিক সমাজ বিষয়টি আলোচনা ও গবেষণার মধ্যে দিয়ে বর্তমান কাল পর্যন্ত এক অন্য মাত্রা তথা সম্মান ও শ্রদ্ধা পেয়ে এসেছে। জার্মান দার্শনিক জর্জ উইলহেল্ম ফ্রেডরিখ হেগেল, ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস, কার্লমার্কস, ইতালিয় মার্ক্সীয় দার্শনিক আন্তনিও গ্রামশি, লেনিন ও ট্রটস্কি ও আরও অনেকের বিভিন্ন লেখায় সীমাবদ্ধভাবে হলেও সুশীল সমাজের চূড়ান্ত উপযোগিতা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা সহ প্রথম বিশ্বের অনেক তাবড় পণ্ডিতগণ সুশীল সমাজকে রাষ্ট্র সভ্যতার তৃতীয় বিষয় (unit) হিসেবে তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ ও বুদ্ধিজীবী মহলও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। উদারমনস্ক বুদ্ধিজীবী ও প্রগতিশীল নাগরিকগণ বাংলাদেশী সংস্কৃতির ধারক-বাহক ও এক অমূল্য সম্পদ। পূর্বতন পাকিস্তান আমল থেকেই বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী নাগরিক সমাজের একাংশ তাদের মত করে প্রতিবাদ করে এসেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের গত চার-পাঁচ দশকের ইতিহাস ক্রুরতা ও একের পর এক ভয়াবহ অধ্যায়ে কালিমালিপ্ত। যার অভিঘাত সংখ্যালঘু হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান সম্প্রদায় ও নানান জনজাতি আজও বুকে বয়ে বেড়াচ্ছেন। একদিকে ধার্মিক কট্টরতা ও অন্যদিকে সেই কট্টরতায় অন্ধ মৌলবাদীদের দাপট বাঙালী সংস্কৃতিকে কোনদিকে, কোন নরকের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তা মুক্তমনা ব্লগার খুনেই বোঝা যায়। যারা পূর্বতন পাকিস্তান আমল থেকে দেশের মাটিকে রক্ষা করার জন্যে বুকের রক্ত দিয়েছেন, বেয়নেটের বিরুদ্ধে, বন্দুক, গোলাবারুদের বিরুদ্ধে কখনও কলম হাতে, কখনও যুদ্ধাঙ্গনে দেশীয় পদ্ধতিতে প্রস্তুত শস্ত্র কাঁধে নিয়ে শহিদ হয়েছেন বা বিজয়কে ছিনিয়ে এনেছেন। তারা আজ বয়সভারে বৃদ্ধ, অবসন্ন কিন্তু একইভাবে স্বাধীনতা পরবর্তী আমলে ইসলামিকরণে অগ্রগতি ও মৌলবাদের রক্ত-চক্ষুকে উপেক্ষা করে নিজেদের আদর্শে অটল থেকেছেন। কখনও সাফল্য এসেছে আবার অনেকক্ষেত্রেই chauvinist দের দলে অসহায় হয়ে পড়েছেন। ইসলামিকরণ পর্যায়ে বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ উদার পরিমণ্ডল গঠনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে পাশে পাননি। সংখ্যালঘুর ওপর শোষণ ও নারকীয় অত্যাচার তাদের মানসিকভাবে আঘাত করেছে । বিশ্ববিদ্যালয়ে ও কলেজের আধুনিকমনস্ক যুবক/যুবতীরাই এক সময় আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখতেন। উদারতা, গণতন্ত্র ও সৌভ্রাতৃত্বকে পাথেয় করে তারা universalism এর আদর্শকে ধমনীতে বহন করতেন। এখন প্রশ্ন হলো বাংলাদেশে সহিষ্ণুতার এ ভাবনা ও প্রাক্তন ঐতিহ্যর কতটুকু অবশিষ্ট আছে ?
ঊনিশ ও বিশ শতকের রেনেসাঁ পর্ব থেকেই মুসলিম সমাজের একটি অংশ বৈজ্ঞানিক চিন্তা চেতনা, উদার ভাবনা, জ্ঞান ও বুদ্ধিমুক্তির দিকে অগ্রসর হয়েছিলেন। মুসলিম সাহিত্য ও সমাজের কাজী আব্দুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজলের ন্যায় ব্যক্তিত্ব তাঁদের বিভিন্ন রচনা ও প্রবন্ধে ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কার বিরোধী এক পরিমণ্ডল গঠনের চেষ্টা করেন। সামসুন্নাহার মাহমুদ, ফজিলাতুন্নেসা, বেগম সুফিয়া কামাল প্রমুখ মহীয়সী নারী সমাজের মুক্তির লক্ষ্যে নিজেদের নিয়োজিত করেন । পরবর্তীতে নগরগুলির এলিট ও মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেক মানুষই উদারনৈতিক ভাবধারায় লালিত হয়েছিলেন । ভাষা আন্দোলন তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র যুবাদের কথা বিশেষভাবে স্মরণীয় । পরে উদিচী, ছায়ানট ইত্যাদি গোষ্ঠীর মুক্তচিন্তা ও উদার ভাবনার চর্চা করার ঐতিহ্য রয়েছে । জেলাস্তরে বুদ্ধিজীবীরা অনেকে সক্রিয় রয়েছেন বাঙালী ভাবনাকে ধরে রাখার জন্য। কিন্তু তা সত্বেও গত পঞ্চাশ বছরে সরকার পরিবর্তন এবং নানান নীতিমালা, সরকারি আপোষমূলক মনোভাব, আন্তর্জাতিক মদতপুষ্টি তথা সংস্কৃতিকে ভু্লপথে চালিত করা, সন্ত্রাসী ইসলামী শক্তির উদার নাগরিক সমাজের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো বাংলাদেশের জন্য এক অশনি সঙ্কেত । দেশের সব জেলা, সিটি কর্পোরেশন ও উপজেলায় ধর্মীয় উন্মাদনার যা পরিকল্পিত বহর তাতে নাগরিক বা corporate, cosmopolitan কালচারের বিশেষ বিকাশ হবে না তা হলফ করে বলা যায় ।
বর্তমান সময়ে ক্ষীণ হলেও নাগরিক সমাজের একটা অংশের সকলকে নিয়ে এক গ্ণতান্ত্রিক প্রগতিশীল বাংলাদেশ গঠনের ইচ্ছা আছে। কবি, মহিলা কবিদের সংগঠন, ডাক্তার, সাংবাদিক, মিডিয়া, চলচ্চিত্র নির্দেশক, বাচিক শিল্পী, প্রগতিশীল অভিনেতা, অভিনেত্রীগণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, মুক্তমনা ছাত্র, ছাত্রীগণ, বিচারপতিগণ, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, সংখ্যালঘু ফোরাম, প্রভৃতি, মানুষের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছেন। দলীয় বুদ্ধিজীবীর বাইরে পরিবর্তনকামী দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা আজ নগণ্য কিন্তু সুস্থ ভবিষ্যৎ গঠনের দায়িত্ব এঁদের। এঁরাই জাতিকে দিশা দেখাবেন।
একটি স্বাভাবিক গণতন্ত্রে যে প্রকারের নির্বাচন হয় বাংলাদেশে সেই প্রকারের নির্বাচনে খামতি ছিল। ২০১৪ এবং ২০১৮ এর নির্বাচন দেখে বিশ্লেষকগণ তাঁদের মতামত খুব ইতিবাচক দেননি। আজ থেকে দু-তিন দশক পূর্বের বাংলাদেশ আর আজকের চতুর্থ শিল্পায়নের ফসলে লালিত cosmopolitan, মেট্রোরেলের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সোনার বাংলাদেশ অন্যরকম। সেখানে আশু নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে বিশ্বের রাজনৈতিক ইন্টেলেকচুয়াল ও বিশ্লেষকগণ এই প্রেক্ষাপটে নাগরিক তথা সুশীল সমাজকে দৃঢ়ভাবে জাতি- ধর্ম-বর্ণ ও আর্থিক প্রলোভন ভুলে নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করতে হবে। একসময় দেশ-বিদেশের সিনেমা জগতের, ফুটবল ও ক্রিকেট জগতের বিখ্যাত মানুষদের কথা আলোচনা হতো বৈঠকি মেজাজে। বর্তমানে সেই কালচার লুপ্তপ্রায়। অন্যদিকে সম্প্রতির ভাবনা, উচ্চ আদর্শ মনে লালিত করার বিষয়গুলিও যেন মিয়ানো বাদামের মতোই হয়ে গেছে যাতে রস নেই, স্বাদ, বর্ণ, গন্ধ নেই; যা কৃত্রিম এবং সুযোগ সন্ধানী, আপোষ করে এবং স্বার্থ মোহজালে বন্দী নাগরিক চেতনা এক অকাল কালো গহ্বরের মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছে যেন পৃথিবীর কোন শেষ স্টেশনের দিকে। একটি বুদ্ধিজীবী সমাজ, সুশীল সমাজ সংগঠিত হওয়ার খোলাপথগুলি মধ্যযুগীয় ভাবধারার পাল্লায় পরে যদি ক্রমাগত বন্ধ হতে থাকে তবে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী গৌরবের যে আদর্শ তার অকাল-মৃত্য নিশ্চিত। যা সংস্কৃতির মলিনতা বৃদ্ধি করবে, পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে নম্র শক্তির বিকাশে ও নানান সম্পর্কের মেলবন্ধনে পর্বত প্রমান বিঘ্ন হয়ে দাঁড়াবে। যাইহোক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পরিক্ষা নিরিক্ষা তথা কালো সংস্কৃতির পথ ধরা একটি সমাজের জন্য কি ধরণের বিপদ বা চ্যালেঞ্জ ডেকে আনতে পারে তা সুশীল সমাজের বুদ্ধিজীবী মাত্রই উপলব্ধি করবেন যদি তিনি নিরপেক্ষ হন এবং সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলার যোগত্যা রাখেন।
কিন্তু ১৯৯০-১৯৯২, ২০০১-২০০৪ সাল পর্যন্ত বিএনপি, জামাতে ইসলামি ক্যাডার দ্বারা সংখ্যালঘুদের ওপর যথেচ্ছহারে সন্ত্রাস চলেছে। এর ফলে অত্যাচারের যে ঘৃণ্য নারকীয় রূপ আমরা দেখেছি তাতে শুধু সংখ্যালঘু জনগণই শঙ্কিত নয়, উদার সংস্কৃতির পরিমণ্ডল গঠনকারীরাও চিন্তিত। আরও লজ্জার যে বাংলাদেশী কালচার বিকাশের ৩০-৪০ বছরের মধ্যেই তাঁর কুসন্তানরা ততোধিক উল্কার গতিসহ ডালপালা মেলা শুরু করেছে। এরা বাঙ্গালী সংস্কৃতির সঙ্গে ইসলামী বা আরবী সংস্কৃতির মকটেলে কুন্ঠিত নয় বা লজ্জাবোধ করেন না। আফিম সেবনের ন্যায় উপভোগ করেন। পাশাপাশি ২০০১ থেকে তথাকথিত বাংলা ভাইয়ের এক নতুন ইসলামিক বিপ্লব তথা বাংলাদেশের Talibanization ঘোর বিপদের ইঙ্গিত দেয়। এসবই নৈরাজ্যের দিকে যাত্রা যেখানে কিছু মানুষের গাজোয়ারি বাদে নাগরিকের কোনও say ছিল না । ২০১২ এর হাঙ্গামা, ২০২১ এর ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার ক্ষেত্রে সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে কোনও কড়া প্রতিরোধ চোখে পড়েনি। হয়ত তারা ধর্ণা অবস্থান করেছে বিভিন্ন স্থানে, কিন্তু সংখ্যাগুরুর ভোটবাক্সের চিন্তামুক্তিতে রাজনৈতিক খেলায়, উ্রর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের তাতে কিছু এসে যায়নি। এজন্যই নাগরিক সমাজকে আরও সংগঠিত, ব্যাপক ও শক্তিশালী গোষ্ঠী হয়ে উঠতে হবে যাতে তাদের অবহেলা না করা যায়। ইতিমধ্যেই এই ২১ শতকে দাঁড়িয়ে হেফাজতের হুমকিতে পাঠ্যপুস্তকগুলিকে ধর্মের কড়া রঙ লাগিয়ে, উদারভাবনা ও যুক্তির মুখে ঝামা ঘষে পাকিস্তানের দেখানো পথে সিলেবাস কাটছাঁট করে ইসলামিকরণ হয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষা বোর্ডকে পুরানো ছাপা বাতিল করে নতুন আঙ্গিকে বইগুলি রিমডেলিং করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটা ভেবে দেখা হয়নি যে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও যুক্তি নির্ভরতার দিক থেকে আমরা যদি মুখ ফেরাই তাহলে দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক, ছোট্ট শিশু বা কিশোর-কিশোরীরা শিখবেটা কী ? আধুনিক চেতনাকে বর্জন করলে বা ঢেকে দিলে চীন, জাপান, U.S.A.,পূর্ব ও পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় আমাদের ঘরের ছেলেমেয়েরা কী পিছিয়ে পড়বে না? তার চেয়ে বড় কথা বাংলাদেশের আর্থিক সংকট এবং দারিদ্রতা নিরসনের গল্প আলোচিত হয় যৎসামান্য বা পরবর্তী জেনারেশনের ভবিষ্যৎ কেমন কী হবে সে নিয়ে কোন বিকল্প আলোচনা নেই বরং ছোট্ট ছোট্ট ইস্যু বা ঘৃণার রাজনীতি থেকে দেশকে স্তব্ধ করে দেবার প্রচেষ্টা চলে।
কবি শামসুর রহমানের কবিতার কটি লাইন এক্ষেত্রে মনে পরে।
“যে কোন সময়েই দেখতাম, শহর ও শহরতলীতে
মিছিল বের হলেই বরণ করে নেওয়া হতো
লাঠি, গ্যাস আর ট্রিগারে শব্দহীন নিষ্ঠুর শব্দে।
অথচ, এ কোন দৃশ্য দেখালে আমায় অমাবস্যার রাত্রে দিনে ?
… … … … … …
ভয়ার্ত সম্প্রদায় ছটফট করে ঘরের কোনে, ধানক্ষেতে আর
… … … … … …
যথেষ্ট আগুনে উৎসব সম্পন্ন হলো
… … … … … …
ধ্বংসস্তূপ আর আগুনের ভস্ম ছাড়া ভিটে-বাড়ি সব ফাঁকা
এ কোন দৃশ্য দেখালে আমায়?
মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা চেতনায় মুখে যারা বেলুণ ফোলায়
তারা আজ কোথায়? কোন অন্ধকারে?
না-না আছেঃ পত্র-পত্রিকার কালো কালো অক্ষরে ।“
নাগরিক সমাজ ক্রমাগত আন্দোলন ও মুক্ত ভাবনা চর্চার মধ্যে দিয়েই অসাম্প্রদায়িক চেতনা তৈরী করতে সক্ষম, বাংলাদেশে মানবিক সমাজ গঠনে যাঁদের সদাজাগ্রত থাকা প্রয়োজন । গণমাধ্যমের অনেক প্রগ্রেসিভ সাংবাদিকই এ নিয়ে কলম ধরেছেন হয়ত নিরপেক্ষ জনমত কিছু গঠন হচ্ছে কিন্তু তার কর্মকুশলতা কোথায়? অর্থাৎ অন্যায় বা দূর্নীতির বিরুদ্ধে সুশীল সমাজকে কঠোরভাবে সোচ্চার হতে হবে। নম্রভাবে কিন্তু দৃঢ়তার সাথে। সত্যাগ্রহ, অহিংসা ও শান্তির আদর্শ দিয়ে কাজ হয় কিনা গান্ধীজী বিশ্বকে তা দেখিয়েছেন, মার্টিন লুথার কিং দেখিয়েছেন বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে কালো মানুষদের একাত্মতার লড়াই। বাংলাদেশের নাগরিক বা গ্রামীণ সমাজের মধ্যে থেকেও স্বাজাত্য কেন্দ্রীকতার ঊর্ধ্বে উঠে এমন অনেক স্বচ্ছ মুখ আমরা দেখব এই প্রত্যাশা রাখি।