Center For Research In Indo

বাংলাদেশে গণহত্যা  ও যুদ্ধাপরাধে দায়ী পাকিস্তানঃ UNO প্রস্তাবনা তথা আন্তর্জাতিক কণ্ঠস্বরে জোরাল দাবী ন্যায়বিচারের।

সুদীপ কুমার আচার্য্য

১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ পূর্ব পাকিস্তানে (অধুনা বাংলাদেশ) অপারেশন সার্চলাইট অভিযানের মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক সম্পন্ন হয়েছিল পৃ্থিবীর অন্যতম সর্ববৃহৎ জেনোসাইড বা গণহত্যা। গণহত্যা হল কোন জাতি, সম্প্রদায়, গোত্র বা ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর মানুষকে নিশ্চিহ্ন করার একটি অস্ত্রবিশেষ। পাকিস্তানি মিলিশিয়ার সহযোগিতায় জামাত, বিহারী মৌলবাদীদের দল এই ঘৃণ্য কাজ শুরু করে। মাত্র এক-দুই মাস পরেই খুনী স্যাটেলাইটের ভূমিকায় যুক্ত হয় ঘাতক দালাল ঝটিকাবাহিনী, রাজাকার-আল বদর – আল শামস্, পিস কমিটির নামে নরঘাতকের দল। নয় মাস চলা এ জেনোসাইডে বলি হয়েছিল ত্রিশ লক্ষ মানুষ। প্রায় দশ মিলিয়নেরও বেশী হিন্দু পরিবার ভিটেবাড়ি ছেড়ে কোনক্রমে পালিয়ে আশ্রয় নেন ভারতবর্ষে।১ দেশের অভ্যন্তরে ভিটেছাড়া হয়ে পালিয়ে বেরিয়েছেন কুড়ি মিলিয়ন, প্রায় চার লক্ষ নারীর সম্মান ও ইজ্জত নষ্ট হয়েছিল। ২ সমস্ত নখ ও বিষদাঁত বার করে পাকিস্তানি হায়নার দল ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলে দেশ বিভাগের গ্লানি, আরও হাজারো সঙ্কট বুকে নিয়ে সবেমাত্র থিতু হবার চেষ্টা করা পূর্ব পাকিস্তানকে। এখানকার জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, গণতান্ত্রিক অধিকার ও স্বাধীনতার স্পৃহাকে তারা বুটের তলায় পিষে মারে। পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি মুসলমান অংশটিকে পাকিস্তান তাদের তাঁবেদার ও ক্রীতদাস হিসেবে রাখতে চেয়েছিল। ১৯৭১ এর জুন মাসে জেনারেল টিক্কা খান রাজাকার অধ্যাদেশ জারী করেন এবং ক্রমে আনসার, মুজাহিদ, ইসলামী ছাত্রসংঘ ইত্যাদি সমস্ত পাকিস্তানপন্থী সংগঠনের মেম্বাররা থ্রি নট থ্রি রাইফেল ও কমান্ডারেরা স্টেনগান নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর ও পৌর এলাকায় এমনকি গ্রামে গঞ্জে নরসংহারের নামে যার প্রধান লক্ষ্য ছিল হিন্দু পরিবারগুলি, ভারতে বাংলাদেশী শরণার্থী শিবির পরিদর্শন ও তাদের সঙ্গে কথা বলে মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি সিনেটে একটি প্রতিবেদন পেশ করে বলেন – Nothing is more clear or more easily documented, than the systematic campaign of terror and its genocidal consequences launched by the Pakistan army on the night of March 25th …Hardest hit have been over members of the Hindu community who have been robbed of their hands and shops systematically slaughtered, and, in some places, painted with yellow patches marked `M’.৩ বলা বাহুল্য এই ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা ঘটার পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত হলেও জঘন্য অপরাধের কোন দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়নি। যা হওয়া উচিত ছিল আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে এবং কঠোরতম শাস্তি হওয়া বা পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিকভাবে ব্লক করা, বয়কট করা ছিল জরুরী। স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপারটি গুরুতর এবং প্রশ্ন জাগে এরকম কিছু হল না কেন ?
১৯৪৮ সালের ৯ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘ Convention on the prevention and punishment of the crime of genocide ঘোষণা করেছিল। হিটলার, মুসোলিনী, ফ্রাঙ্কো, তোজো বা স্টালিন জমানা পেরিয়ে সারা বিশ্ব স্বপ্ন দেখেছিল শান্তি প্রতিষ্ঠার, কল্যাণের উন্নতির। কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তানের কৃতকর্ম তাতে জল ঢালে। দক্ষিণ এশিয়ায় ঠাণ্ডা লড়াইকে ডেকে নিয়ে আসবার যদি কেউ সবচেয়ে বড় দাবীদার হয় তার নাম পাকিস্তান। বাংলাদেশ ইস্যুর মধ্যে দিয়ে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় অশান্তি তৈরীর ছক তাদেরই মস্তিষ্কপ্রসূত। জাতিপুঞ্জের আইন বা নির্দেশনার কোন তোয়াক্কা না করে ১৯৭১ এ গণহত্যায় তারা নেতৃ্ত্ব দেয়। যাইহোক ভারতবর্ষের দৃঢ়তা সুকৌশলের সামনে পাকিস্তান হার মানে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরে গণহত্যার বিচার তেমন কোন গুরুত্ব পেল না। রাষ্ট্রসংঘ ও কয়েকটি দেশ কমিটি তৈরি করেছিল এই জেনোসাইডের বিচার চেয়ে। UNO ইনভেস্টিগেশন, আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশন, বাংলাদেশ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গণহত্যা হয়েছে বলে মতামত দেয়। কিন্তু কিছুদিন পর থেকেই এ নিয়ে আর উচ্চবাচ্য হল না আর ব্যাপারটি সম্ভবত ধামাচাপা পড়ে গেল। মানবাধিকার ভক্ষণ করা, সাম্প্রদায়িকতা উস্কে মৌলবাদকে চাঙ্গা করা, সংখ্যালঘু ও জনজাতিদের উচ্ছেদ, সম্পত্তি দখল, বঙ্গবন্ধু হত্যা, ইসলামাইজেশন, বি.এন.পি., জাতীয় পার্টির অরাজকতা এরপর বাংলাদেশকে ক্রমাগত আভ্যন্তরীণভাবে জখম করে। নীতি ও আদর্শের অপমৃত্যু ঘটে, বাঙালি মানসিকতার স্থলে চেপে বসল বাংলাদেশীত্বের ভেক ধরা রূপান্তরিত সংস্কৃতির বিষবাষ্প, এসবই পাকিস্তান পন্থার অনুকূলে যায় যেখানে পূর্বেকার যে অপরাধ তারা করেছিল তার বিচার করার মত মানসিক কাঠামোটাই লুপ্ত হয়েছিল। বাস্তবেও প্রায় ২০০৯-১০ সাল পর্যন্ত আমরা সেভাবে কোন সরকার বা নেতৃত্বকে এনিয়ে বৃহত্তর নীতি প্রণয়ন বা মুখ খুলতে দেখি না। অন্যদিকে ইতিহাস বিকৃতি, ঝুটা ভাষণ, ভুলতথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবেশন করে পশ্চিমী বিশ্বে পাকিস্তান নিজ কুকীর্তি গোপন করেছিল। আন্তর্জাতিক ফোরামেও খুনের ষড়যন্ত্র, জেনোসাইড, ইত্যাদি দুষ্কর্মের ট্যাগ যাতে তাদের নামের পাশে না লাগে বা এ ধরণের বিষয়ই যাতে উত্থাপিত না হয় তা নিয়ে তারা অদৃশ্য চেষ্টা করে গেছে। কেননা ছায়াযুদ্ধ বা এসব ব্যাপারে তারা পটু। বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও এক নেগেটিভ মানসিকতা এ নিয়ে ক্রিয়াশীল ছিল। কেননা জেনোসাইড নিয়ে পরবর্তী জেনারেশনগুলির প্রতিবাদী মানসিকতা বা ভাবিত হওয়ার সংখ্যা কম। অজ্ঞানতাবশতঃ হলেও এ এক স্বেচ্ছা অপরাধ। তা নাহলে গণহত্যা দিবস ঘোষণা করতে এতদিন লেগে গেল কেন ? কিছুদিন আগে ২০১৭ সালে ১১ই মার্চ জাতীয় সংসদ এক প্রস্তাবনা নিয়ে ২৫শে মার্চ দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে এবার থেকে গণহত্যা দিবস পালন করার ঘোষণা দেয়।৪
লেমকিন ইন্সটিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন, জেনোসাইড ওয়াচ, জেনোসাইড স্কলারস (IAGS), গ্লোবাল হিউম্যান রাইটস ডিফেন্স, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম স্ট্রাটেজি ফোরাম (ICSF), অল ইউরোপিয়ান মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইত্যাদি আন্তর্জাতিক সংগঠনের মতে পাকিস্তান ১৯৭১ এ জেনোসাইড ঘটিয়েছিল। IAGS ২০২২ এর মাঝামাঝি এক প্রস্তাবনা দ্বারা ‘Resolution to declare crimes committed during 1971 Bangladesh Genocide, crimes against humanity and war crimes’. ত্রিশ লক্ষ শহীদের এই বলিদানকে পাকিস্তানের যুদ্ধাপরাধ হিসেবে সামনে এনেছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে ব্যাপারটি ক্রমে হয়ে যাচ্ছিল এক ভুলে যাওয়া স্মৃতির মতন। কেবল এক শ্রেণীর কিছু সচেতন, বুদ্ধিজীবী, লেখক এবং শাহরিয়ার কবীরের মত কয়েকজন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, উদারমনস্ক প্রোগ্রেসিভ যুবক যুবতীরা এ নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। লেখালেখি ও এনিয়ে মতামত তৈরির চেষ্টা হয়েছে। সরকার দেশের অভ্যন্তরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিল। শাহবাগে জমায়েতকারীদের বিষয়টি ছিল পরিণত বাঙালি মানসিকতার অগ্রগতির একধাপ মাত্র। আর এতদিনে জামাত ও হেফাজতের কাছে ফাঁসীপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হয়ে গেছেন শহীদ বীরের মর্যাদাপ্রাপ্ত যা বাংলাদেশের নিকট আজ বিপদসংকেত। প্রশ্ন ওঠে বাংলাদেশের গ্রামেগঞ্জে সাধারণ মানুষের মনন আবার প্রিপার্টিশেন এর অভিশপ্ত দিনগুলিতে কি ফিরে যাচ্ছে?
গণহত্যা চাপিয়ে দেওয়া বা পরিকল্পিত কূটনৈতিক মাধ্যমের কোন বিষয় নয়। এ এক এথনিক ক্লিনঞ্জিং (Ethnic cleansing) যাদের বিরুদ্ধে এবং যেদেশে এরকমটি ঘটে একমাত্র তাদের পরিবারের বুকেই চিরতরে এ ক্ষত রয়ে যায়। এই ব্যথা অনুভবের শক্তি অন্য কারও নেই। আবার সম্পূর্ণ পরিবারকে যদি জেনোসাইডে মরতে হয় তবে তার হয়ে শোক করার বা ইতিহাস বাঁচিয়ে রাখার লোকও বিশেষ নেই। তাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা আসার পথে যাদের নির্বিচারে মরতে হল তাদের হত্যাকারীদের আইনের দৃষ্টিতে কঠোর শাস্তিই একমাত্র প্রাপ্য। আর যেহেতু সেনা ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশীদাররা পাকিস্তানি তাই এ দায় সম্পূর্ণরূপে পাকিস্তানকে নিতে হবে। নতুন প্রজন্মের একথা জেনে রাখা ভাল যে ইসলাম রক্ষার দোহাই দিয়ে একাজ হয়েছিল। ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসের সেই অধ্যায়গুলিকে জেনোসাইডে ভুক্তভোগী যে কোন দেশেরই উচিত উচ্চশিক্ষার বইগুলিতে মুক্তভাবে এই পাঠ্যসূচী অন্তর্ভুক্ত করে ইতিহাসকে তুলে ধরা। বর্তমানে বিদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্র যেমন ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ড, কানাডা, প্রভৃতি জেনোসাইড সম্পর্কে বিস্তৃত তথ্য জানাতে পারছে। মানবাধিকারের স্বপ্ন দেখা, প্রকৃত বিচারের স্বপ্ন দেখা তারাও চান অপরাধের যোগ্য জবাব। এক্ষেত্রে এতদিন ধরে UNO র ইনঅ্যাকশন বা কিছু না করার ব্যাপারটি সমালোচনার মুখে পড়েছে। জাতিসংঘ ইতিমধ্যে ২০১৫ এর ৯ই ডিসেম্বর থেকে প্রতি বছর ওই দিনটিকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা করেছে। গণহত্যায় নিহতদের শ্রদ্ধা, স্মরণ ও যাতে আর কখনো না হয় তা জাতিসংঘের লক্ষ্য এবং ঘোষিত পদক্ষেপ। পূর্বতন মহাসচিব কোফি আন্নানের আমলে মায়ানমারে মিলিটারি দ্বারা রোহিঙ্গা গণহত্যা স্বীকৃতি পেয়েছে।৫ তাহলে ১৯৭১ সালে এর থেকে অনেক ব্যাপক এবং বৃহত্তর হত্যা গণহত্যা বলে স্বীকৃত হবে না কেন? পাকিস্তানের প্রশ্ন জড়িত বলেই কি টালবাহানা রয়ে যাচ্ছে? অথচ তথ্যপ্রমাণের তো কোন ঘাটতি নেই। মাঠে, ময়দানে যে প্রকার গণকবর এবং লাশের কঙ্কাল সারি উদ্ধার হয়েছে তা ডকুমেন্টেড। পাহাড়তলি বধ্যভূমিতে (চট্টগ্রাম) ১০০ গর্তে ১ হাজার ৮২টি খুলি উদ্ধার হয়েছে। চট্টগ্রামে দামপাড়া বধ্যভূমিতে চল্লিশ হাজার মানুষকে হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়া হয়। সৈয়দপুরে একশত পঞ্চাশ বুদ্ধিজীবী হত্যা বা বাখারাইল গণহত্যা অন্যতম। নীলফামারীর গণহত্যা, গোলহাট গণহত্যায় ৪৪৮ জন মাড়োয়ারি যুবক, বৃদ্ধ, মা, বোন, শিশুদের হত্যা করে বিহারী মৌলবাদী ও পাকিস্তানি মিলিশিয়ার দল। এছাড়া সূত্রাপুর, জিঞ্জিরা, রমনা, শাঁখারিপাড়া, ডোমনা (গাজীপুর), সান্তাহার (বোগরা), কালিগঞ্জ গণহত্যা, চুকনগর গণহত্যা, গোপালপুর গণহত্যা, গালিমপুর, বাগবতী গণহত্যা, আদিত্যপুর (সিলেট), কৃষ্ণপুর (সিলেট), বরগুনা গণহত্যা অন্যতম। গণহত্যা, নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের মতে ২০টি জেলায় চার হাজার ৬০০ জেনোসাইড স্পট, গণকবর ও নির্যাতন কেন্দ্র পাওয়া গেছে। প্রামাণ্য দলিল, ছবি, বুদ্ধিজীবীদের লেখাপত্র থেকে আজ বিষয়গুলি স্পষ্ট।৬ যদিও যারা বা যে পরিবারগুলির সদস্যরা মারা গেলেন ১৯৭১ এ তাঁদের নামসহ সঠিক পরিচয় দিয়ে সেভাবে কোন ডকুমেন্ট করা হয়নি, সরকারিভাবে। প্রাথমিক সূত্র হিসেবে U.K. দাতব্য সংস্থা অক্সফ্যামের প্রতিবেদন ১৯৭১ এর সমসাময়িক সময়ে সারা বিশ্বে প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্কিং মিউজিয়াম, জেনোসাইড মিউজিয়াম, জেনোসাইড আর্কাইভ, খুলনা গণহত্যা জাদুঘরে ঢুকলে পাওয়া যায় কয়েক হাজার আরও জ্বলন্ত তথ্য প্রমাণ। আর্চার ব্লাডের টেলিগ্রাম, ১৯৭১ এ নানান পাবলিক রিপোর্ট, পাকিস্তানি সাংবাদিক অ্যান্থনি ম্যাসকারেনহাসের বিস্তৃত বয়ানে এই গণহত্যার রিপোর্ট প্রথম বিশ্ববাসীর সামনে আসে।৭ পরে তাঁর অন্য গ্রন্থে তিনি মুজিব হত্যা ও তারপরের আরও বিশদভাবে এই বেদনাময় ইতিহাস তুলে ধরেছেন।৮ এমনকি পাকিস্তানের পূর্বতন পররাষ্ট্রমন্ত্রী গওহর আইয়ুব তাঁর গ্রন্থে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের ব্যক্তিগত ডায়েরির কিছু লিখিত অংশের তথ্য দিয়েছেন যেখানে পাক মিলিশিয়ার নৃশংসতা, ভয়ঙ্করতা ও জঘন্যতম অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র তাদের দিক থেকেই এখন স্বীকৃত।৯ বিষয়টি যতই ধামাচাপা দেওয়া হোক, পাকিস্তান মিথ্যাচার করে বেশীদিন বেআবরু হয়ে পড়া এই অপরাধকে ঢাকতে পারবে না। কারণ সত্য সামনে এসে গেছে এবং বিশ্ব জনমত পাকিস্তানের বিপক্ষে দণ্ডায়মান। দেরীতে হলেও জেনোসাইড বিচার হবেই এবং লক্ষ লক্ষ শহীদের প্রতি ন্যায় বিচার হবে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের আইন অনুসারে এটি একটি পদ্ধতিগত লক্ষ্য। মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত করা পাকপন্থীদের বিরুদ্ধে এ এক দৃঢ় পদক্ষেপ। অন্তহীন সংগ্রাম যা প্রকৃত লক্ষ্য অর্জন না করা পর্যন্ত থামবে না। পাকিস্তানের কুকীর্তি লেখা থাকবে চিরকাল, যা পাঠ করে সাবধান হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। অবশ্য পাকিস্তানের কুকীর্তি কমবেশি সবাই পরিচিত। ৯/১১ বা অ্যাবটাবাদে লাদেন হত্যা; কাশ্মীর নিয়ে প্রতিনিয়ত জেহাদ এবং তাতে অর্থদান ও তাদের গতিপ্রকৃতি নিয়ে নতুন ভাষ্য নিষ্প্রয়োজন। এরকম অবস্থায় তাদের war criminal ঘোষণা করতে বাংলাদেশ আরও সদর্থক প্রচেষ্টা নেবে আশা করা যায়। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে ভাটা ছিল, গণহত্যা নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তর দুনিয়ার নাগরিকদের কাছে তথ্য প্রমাণ তেমন পৌঁছায়নি। তাই জনসচেতনতা তৈরিতেও কিছু খামতি ছিল। সম্প্রতি অবশ্য বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ নিয়ে উদ্যোগী হয়েছে। সরকার বিশ্বের নানান দেশের পার্লামেন্টে জেনোসাইড নিয়ে প্রস্তাবনা পেশ করার জন্য চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছেন। আওয়ামি লিগ সরকার ২০০৮ সালে নির্বাচনী ইস্তাহারে রেখেছিল যে ক্ষমতায় এলে তারা যুদ্ধাপরাধের বিচার করবে। স্বাভাবিকভাবে এ বিচার শুরু হয়েছে, ১২ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হয়েছে, কিছু শাস্তি হয়েছে। কিন্তু পাক সেনার ১৯৫ জন অপরাধী থেকে গেছে নাগালের বাইরে।

পাক সেনাদের অপরাধ নিয়ে বঙ্গবন্ধু পার্লামেন্টে বিস্তৃত বিশ্লেষণে বলেন পাকিস্তানের অত্যাচার দেখলে হিটলার, চেঙ্গিজ খান বা হালাকু খানরাও লজ্জা পেতেন; এটা ছিল এতটাই পাশবিক ও বর্বর অত্যাচার।১০ ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানেও পাকিস্তান রক্তের হোলি খেলেছিল, ১৯৭১ এ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দমন ছিল তার চূড়ান্ত পর্যায়। যাইহোক, আশার কথা এই যে বর্তমানে অনলাইন মাধ্যমে ওয়েবিনার, নেট দুনিয়ায় প্রচারের মাধ্যমে, বিশ্বের নানা স্থানে সেমিনার, ইত্যাদি আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশী বিভিন্ন বুদ্ধিজীবী সমাজের তরফ থেকে গণহত্যার বিরুদ্ধে সচেতনতা ও প্রচার শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের অতীত ইতিহাস ভুলে না যাওয়া সাধু লক্ষণ। ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সুইস হিউম্যান রাইটস কমিশন ও ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফোরাম (EBF) `Recognition of 1971 Bangladesh Genocide’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজন করেন জেনিভা প্রেস ক্লাব, সুইজারল্যান্ডে। ২০২২ এর ২১শে সেপ্টেম্বর একই ধরণের সেমিনার হয় কানাডায়। ২০১৬ থেকেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জেনোসাইড স্টাডিস গণহত্যা ও জেনোসাইড সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আহ্বান করছে। ২০১৮ এর ২৮-২৯ সেপ্টেম্বর তারিখ জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক দাবী নিয়ে বাংলাদেশে এক বিরাট সম্মেলন হয়ে যায় যেখানে অংশ নেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ও গবেষকরা। এরকমই এক সংগঠন আন্তর্জাতিক জেনোসাইড স্কলারসের গবেষকদের ভাষ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৯৭১ এর গণহত্যার যে স্পষ্ট ও বিস্তৃত তথ্য মিলেছে তা জাতিসংঘ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতির জন্য যথেষ্ট। বস্তুতই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিপুলভাবে ২০১০ পরবর্তীতে পাকিস্তানের যুদ্ধাপরাধের বিচার চেয়ে জনমত প্রবল হয়েছে, এই ঘটনার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবী উঠেছে। প্রবাসী বুদ্ধিজীবীদের সংগঠন ১৯৭১ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবী জানিয়ে বর্তমান জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের কাছে চিঠি পাঠান, যা তিনি গ্রহণ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী হাসিনা সরকার ইউ. এন., ই. ইউ. এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বিষয়টি উত্থাপনের জন্য সুশীল সমাজের গোষ্ঠী ও প্রবাসী সংগঠনগুলোর কণ্ঠস্বরকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। বাস্তবিক ক্ষেত্রেও গত কয়েক দশক ধরে বুদ্ধিজীবীদের সংগঠন এবং কয়েকটি সংস্থা যেমন বাংলাদেশ প্রবাসী সংগঠন, Bangladesh Support Group, আমরা একাত্তর, প্রজন্ম ৭১ (বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তানদের সংগঠন), সেরাজী ফাউন্ডেশন, ইউরোপীয় বাংলাদেশ ফোরাম, ইউরোপের বাংলাদেশী নাগরিকদের বংশোদ্ভূত ডায়াস্পোরা সংস্থা, ইত্যাদি পাকিস্তানি হানাদারকৃত এই জেনোসাইড নিয়ে বিশ্লেষণ এবং কঠোরভাবে এর প্রতিবাদ করে আসছেন। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে ৫৩তম অধিবেশনে ১৯৭১ সালের গণহত্যার ওপর বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। যার মূলকথা হল বাংলাদেশে যে জেনোসাইড ঘটানো হয়েছে তার সমস্ত দায় পাকিস্তানের। জাতিসংঘ কর্তৃক আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে দায়ী করে অপরাধী ঘোষণা করতে হবে। এবং প্রায় দশ মাস ব্যাপী তাদের হত্যালীলা এবং যে পরিমাণ সম্পদ তারা নষ্ট করেছিল তার আর্থিক ক্ষতিপূরণ করতে হবে।
জাতিসঙ্ঘ কর্তৃক পাকিস্তানের যুদ্ধাপরাধের বিচার হওয়া যে কেন জরুরী সেই দৃষ্টিকোনটি যে তুলে ধরতে পারা গেছে তা অতি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আজ পর্যন্ত বিষয়টিতে ইউ. এন. অবস্থান ও কার্যক্রম যথেষ্ট ছিল না। স্টিচিং বাসুগ (যারা ECOSOC এর consultative status প্রাপ্ত) ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলি বাংলাদেশ জেনোসাইডে পাকিস্তানের কুকর্মের সঠিক ব্যাখ্যা করেছেন। তৎকালীন সময়ে পাকিস্তানের লক্ষ্য ছিল আওয়ামি লিগের অসহযোগ আন্দোলন ধ্বংস করা, ক্ষমতার কোন হস্তান্তর না করা এবং জাতীয় নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষে বহু জনমত থাকলেও তা অস্বীকার করা, হিন্দু বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, ছাত্র শিক্ষককে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এখানে দু’বার এরকম ঘটনা ঘটেছে। Sunday Times, New York Times, The Telegraph, TASS, AFP ইত্যাদি সংবাদমাধ্যমে এবং বিশ্ব মিডিয়ায় তথ্য, ছবি ও ঘটনার প্রকৃত বিবরণ দিয়ে বহু প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল। ২৫শে মার্চ রাতেই বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হন। ২৬শে মার্চ গ্রামগুলিতেও খুন, ধর্ষণ, লুটপাট শুরু করে পাকিস্তানি সামরিক ইউনিট ও জামাতের দল। অফিসার্স মেসে রাতে ফিরে এসে তারা যে কথা বলত তাতে থাকত পৈশাচিক আনন্দ। ম্যাস্কারেনহাসের ভাষায় “আমি পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যার একজন প্রত্যক্ষদর্শী এবং আর্মি অফিসারদের বলতে শুনেছি যে এটাই একমাত্র সমাধান।” মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তানি সেনার মাস রেপের ফলে অনেক শিশুর জন্ম হয়। মেঘনা গুহঠাকুরতার ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’ বা উর্ব্বশী বুটালিয়ার other side of silence আরও বিস্তৃতভাবে বিষয়গুলিকে আমাদের সামনে রেখেছে।
মুক্তিযুদ্ধ সমাপ্তির পর গণকবর ও রেপ ক্যাম্পগুলির ছবি প্রকাশ্যে আসে, বিভিন্ন বাঙ্কার ও বন্দিশালা থেকে বিবস্ত্র নারীসহ শিশুদের উদ্ধার করা হয়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের থানাগুলিও অত্যাচারের কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এই ঘৃণ্য হায়নার দলের খিদমতকারী রাজাকাররা কীভাবে পরে সাধারণ ক্ষমা পেয়ে গেল তা বোধগম্য হয়না ! গত পঞ্চাশ বছরে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যায় যুক্ত পাকিস্তানি সেনাদের বিচার চেয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু পাকিস্তানের নেতিবাচক মনোভাব ও কার্যকলাপে তা সফল হয়নি। অবশ্য জেনোসাইড নিয়ে সারা বিশ্বের বর্তমান মানসিকতা ও অবস্থান যথেষ্ট ইতিবাচক, তথ্যপ্রমাণ হাতের মুঠোয় এবং ডিজিটাল ও ভার্চুয়াল মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে বড় এ অপরাধের খুঁটিনাটি এখন বিশ্বের প্রত্যেক নাগরিকের হাতে অনায়াসলব্ধ। বাংলাদেশ সরকারের বিদেশমন্ত্রক ও পাবলিক পলিসি উয়িং কর্তৃক ৪২ পাতার এক দলিল বর্তমান সময়ে কৃত এক বড় কাজ। এই রক্তের ঋণ শোধ করা বিশ্বের মানবাধিকারপ্রেমী প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য, নাহলে ত্রিশ লক্ষ শহীদের পরিবার ন্যায়বিচার পাবে না। আর্চার ব্লাড ১৯৭১ এ বলেছিলেন আমেরিকা বাংলাদেশ গণহত্যা নিয়ে ন্যায় করতে পারেনি। কিন্তু বর্তমানে ইউ.এন. মানবাধিকার কমিশনে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সুবিচারের দৃষ্টান্ত রাখা আইনবিভাগের জন্য কর্তব্য। নাহলে বিশ্বের নানা স্থানে নানা কায়দায় অপরাধীর দল বারংবার আরও এমন গণহত্যা ঘটাতে কুণ্ঠিত হবে না। ইউ.এস.এ. রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান স্টিভ চ্যাবট ও ডেমোক্রেটিক রোহান খান্না গণহত্যার স্বীকৃতি, war crime সংক্রান্ত দ্বিদলীয় প্রস্তাব মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পেশ করেছেন। সম্প্রতি ইউরোপীয় প্রতিনিধির এক দল বাংলাদেশ গণহত্যা স্থলগুলো ঘুরে গেছেন, গণহত্যার ক্ষত বহন করা পরিবারগুলোর সাথে কথা বলেছেন। ডাচ নেদারল্যান্ডের অধ্যাপক অ্যান্থনি হলসল্যাগ বলেন বাংলাদেশ গণহত্যার কারণে ভুক্তভোগী, স্বীকৃতি না পেয়ে তারা আজও ভুগছে। তিনি গণহত্যার স্বীকৃতির জন্য সমস্ত উদ্যম নিয়ে কাজ করবেন। ইউ. কে. সাংবাদিক ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন প্রত্যয় ঘোষণা করেন যে তিনি বাকী বিশ্বকে জানাবেন কেন গণহত্যার স্বীকৃতি খুব দরকারি এবং ইউ.এন. এব্যাপারে যেন ন্যায় করেন। এবিষয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে একটি করে আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও দুটি প্রেস দ্য মিট আয়োজন হয়েছিল, নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আমরা একাত্তর, প্রজন্ম একাত্তর, সভাপতি বিকাশ বড়ুয়ার নেতৃত্বে ই.বি.এফ., চিটাগঙ সিনিয়রস ক্লাব প্রমুখ। প্রাক্তন ডাচ এম.পি. হ্যারি ভান বৌম্মেলের মতে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা স্বীকৃতির বিষয়ে একটি জাতিপুঞ্জ স্পন্সরড রেজু্লিউশন খুব আবশ্যিক। জাতিসঙ্ঘ গণহত্যা কনভেনশন কার্যকর করার লক্ষ্য ছিল ‘আর কখনো নয়’ তাই এ নিয়ে উদ্যোগ নেওয়া আরও জরুরী। এটা মানব ইতিহাসের অন্ধকার ও উপেক্ষিত এক অধ্যায়। এই বিষয় নিয়ে যেমন আরও আলোচনা ও গবেষণা জরুরী তেমনি কূটনৈতিক মিশন, বাংলাদেশ এমব্যাসি, আইনজ্ঞ, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মানবাধিকার সংগঠন, প্রবাসী বাঙালি, দেশে বিদেশে গণহত্যা বিশেষজ্ঞ, গণহত্যার বলি হয়ে যাওয়া পরিবারগুলির প্রজন্ম, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক, মানবাধিকার প্রতিনিধিত্বমূলক সংগঠনগুলোকে একযোগে এব্যাপারে সক্রিয় ও কঠোর অবস্থান নেওয়া ও আরও সচেতন থাকা আবশ্যিক।

তথ্যসূত্রঃ
১ সেনসাস অফ ইন্ডিয়া, ১৯৭১, মাইগ্রেশন টেবিল (P (ii), D (i). সেনসাস অফ ইন্ডিয়া, ১৯৮১, মাইগ্রেশন টেবিল, পার্ট V (A & B), সেনসাস অফ ইন্ডিয়া, ১৯৯১, মাইগ্রেশন টেবিল, (D-ii).
২ Susan Brownmiller, Against our Will : Men, Women and Rape, Simon & Schuster, 1975, USA, p-81.
আরও দ্রষ্টব্য, নীলিমা ইব্রাহিম, আমি বীরাঙ্গনা বলছি, জাগৃতি প্রকাশনা, ১৯৯৪, ঢাকা এবং জাহানারা ইমাম, একাত্তরের দিনগুলি, সন্ধানী ও চারুলিপি প্রকাশ নি, ১৯৮৬, ঢাকা। নয়নিকা মুখার্জী, দ্য স্পেকট্রাল উণ্ড, (ডিউক) ডিউক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ইউ.এস.এ. (৩০শে অক্টোবর, ২০১৫)
৩ এডওয়ার্ড এইচ কেনেডির মার্কিন কংগ্রেস বিলের প্রতিবেদন Crisis in South Asia (S. Bill No.2779) Congressional Record, American Senate, November 1, 1971 (p.38404—38409)
৪ The Hindu, March 12, 2017 (Report) Bangladesh declares , March 25 as Genocide Day.
৫ B.B.C. News Report – Myanmar Rohingya : UN condemns human rights abuses, 28 December, 2019. See also U.N.O. Security Council Various Reports on Myanmar from 2007—2022 https : // w.w.w. sc report.org/un-documents/Myanmar, see also report – U.N. reports confirms Rohingya suffered genocide – by John Zaw, Mandahay (Union of Catholic Asian News, September 19, 2018).
৬ মফিজুল্লাহ কবির ও হাসান হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধঃ দলিলপত্র (১৫ খণ্ডে প্রকাশিত), এখানে অষ্টম খণ্ড দ্রষ্টব্য – গণহত্যা, শরণার্থী শিবির ও প্রাথমিক ঘটনা, হক্কানী পাবলিশার্স, বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, ঢাকা।
৭ The Sunday Times, June 13, 1971 – Report Genocide, Anthony Mascarenhas, U.K.
৮ Anthony Mascarenhas, Bangladesh : A Legacy of Blood, Hodder and Soughton, U.K.
৯ গওহর আইয়ুব খান – গ্লিমপসেস ইনটু দ্য করিডরস অফ পাওয়ার, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস (পাকিস্তান), ২০০৭।
১০ সংসদে বঙ্গবন্ধু (জাতীয় সংসদে ভাষণ, শনিবার, ৪ নভেম্বর, ১৯৭২), হক্কানী পাবলিশার্স, ধানমণ্ডি, ঢাকা, ২০২২, পৃ. ৩০৪-৩১০।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *