Center For Research In Indo

ভারত হারলেই আনন্দ!

শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক (২২ শে নভেম্বর ২০২৩)

এ আনন্দ-উৎসব হিন্দু বিদ্বেষ থেকে উৎসারিত। ভারত-বিদ্বেষ যা মূলত হিন্দু বিদ্বেষ, এ উপমহাদেশে মজ্জাগত, আপাতত: এ থেকে বেরিয়ে আসার কোন সুযোগ নেই? এজন্যে পাকিস্তান হিন্দু-শূন্য, বাংলাদেশ হিন্দু-শূন্য হবার পথে। অষ্ট্রেলিয়া যোগ্য দল হিসাবে ভাল খেলে জিতেছে, তাঁদের অভিনন্দন। ভারত শক্তিশালী দল, অপরাজিত ছিল, হেরেছে ফাইনালে। খেলা হচ্ছে, ‘হারি-জিতি’ নাহি লাজ, ভারতবাসী দু:খ পেয়েছে, কিন্তু অষ্ট্রেলিয়াকে অভিনন্দন জানাতে ভুল করেনি। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে ভারতের পরাজয়ে আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে। না, এটি কোন গোপন বিষয় নয়, বাংলাদেশের দর্শক প্রকাশ্যেই বলেছেন, ভারত হারায় তাঁরা ঈদের আনন্দ উপভোগ করছেন। 

 

‘দি নিউজ-বাংলা’ হেডিং করেছে, ‘ভারতের হার, বাংলাদেশে উৎসব’। একজন জাহাঙ্গীর আলম সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “মানুষ এত ‘বে-ইমান’ হয় কি করে, শুধুই ধর্মের জন্যে—ছিঃ বাংলাদেশ ছিঃ”? তাঁর পোস্টে একজন ভারতীয় শুভাশীষ ভট্টাচার্য্য লিখেছেন, ‘যে কেউ অস্ট্রেলিয়াকে সাপোর্ট করতেই পারে, কিন্তু কারণ জানতে চাইলে বলা হলো, ভারত মুসলিম রাষ্ট্র নয়! অস্ট্রেলিয়াও তো মুসলিম রাষ্ট্র নয়, তাহলে? ভারত হিন্দু। বিষয়টি ভারত নয়, বিষয়টি হিন্দু, এক্ষেত্রে ভারত-হিন্দু সমার্থক। ভদ্রলোক লিখেছেন, বিষয়টি পরিষ্কার, এন্টি-হিন্দু। ভারতের টীমে মোহাম্মদ সামি, সিরাজ আছে, তাঁরা চমৎকার খেলেছেন, তাহলেও হবে না, হিন্দুর সাথে থাকলে চলবে না?    


তামান্না তাবাস্সুম মিথিলা সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ইন্ডিয়া সব ম্যাচে জিতেছে, একটিতে হারলে সমস্যা নেই! তাঁর পোস্টে একজন শাহরিয়ার নাসিফ একটি উদ্ধৃতি দিয়েছেন, ভারত ১০টি জিতেছে, ১টি হেরেছে অর্থাৎ ‘চোরের দশদিন, গৃহস্থের একদিন’।  ‘আরকি’ নামের একটি পোর্টাল ছবির আকারে একটি বক্তব্য দিয়েছে, তাতে লেখা, ‘ইন্ডিয়া হেরে যাওয়ার খুশিতে চিৎকার করতে গিয়ে বড়ভাই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ভারত নিয়ে আসা হচ্ছে’। মো: শাহরুখ ইসলাম  এবং আরো অনেকে টিটকারী করে বলেছেন, ‘হে প্রভু, হরি, কৃষ্ণ, জগন্নাথ, প্রেমানন্দ, ‘এ কেয়া হুয়া’। হিন্দুরা বলেছেন, এরপরও তো ওঁরা কৃষ্ণ নাম নিচ্ছে! একজন আরিফুজ্জাম লিখেছেন, ‘ধর্মের ঢোল আপনি বাজে’।

 

ভারত-পাকিস্তান খেলায় অধিকাংশ বাংলাদেশী পাকিস্তানকে সমর্থন করে, এর হয়তো একটি কারণ থাকতে পারে, কিন্তু ভারত-অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে ভারতের পরাজয়ে এ উল্লাস অনেকাংশে ‘বিজাতীয়’। হিন্দু বিদ্বেষ, ভারত বিদ্বেষ ব্যতীত আর কি কারণ থাকতে পারে? নিউইয়র্কে একটি টক-শো তে দু’জন জানালেন, হয়তো এর কারণ ভারতের দাদাগিরি, ভারত বাংলাদেশ থেকে সবকিছু নিয়ে যাচ্ছে, অথবা বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রতি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিমাতা-সুলভ আচরণ? যদিও একজন সম্পাদক শেষের বক্তব্যটি প্রমাণসহ নাকচ করে দিয়েছেন! কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের মিডিয়ায় এনিয়ে কোন আলোচনা নেই, কেউ কোন কলাম লেখেনি, কারণ মনে মনে সবাই খুশি! 

 

কেউ যদি বলেন, ভারত হারায় এ উচ্ছ্বাস সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ বৈ কিছু নয়, তাহলে এঁরা আপনাকে সাম্প্রদায়িক বানিয়ে দেবে এবং ‘চোরের মায়ের বড় গলা’ হাঁকিয়ে বলবে, ‘খেলার মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা টেনে আনবেন না’! সন্ত্রাসের কথা উঠলেও এঁরা  বলেন, ধর্মের সাথে সন্ত্রাসের কোন সম্পর্ক নেই? জিজ্ঞাসা করুন, খেলার মাঠে নামাজ পড়েছিল কারা? বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। এটি করে ধর্মের কি লাভ হয়েছে জানিনা, তবে খেলায় জয় আসেনি। এর নিট ফলাফল সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উস্কে দেয়া- যার পরিণতি ভারত বিদ্বেষ, যার উলঙ্গ প্রকাশ ভারতের পরাজয়ের পর সাম্প্রদায়িক উল্লাস। এর বিরূপ প্রভাব পূর্ব-ভারতে পড়েছে, হয়তো আরো পড়বে। প্রাক্তন গভর্নর ড: তথাগত রায় বলেছেন, ‘বাংলাদেশ অকৃতজ্ঞ, ফের এর প্রমাণ  দিল’।  

 

একজন চমৎকার একটি হাইপোথিটিক্যাল প্রশ্ন করেছেন, তিনি জানতে চেয়েছেন, ফাইনাল খেলাটি যদি ভারত ও ইসরাইলের মধ্যে হতো, এবং ইসরাইল জিততো, তাহলে বাংলাদেশীরা কি করতেন? আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আমরা খেলাটি ‘বয়কট’ করতাম। এক ভারতের জ্বালায় বাঁচিনা, এর ওপর ইসরাইল!

(২) হিন্দুর মাথায় হাত বোলানো!

৩রা নভেম্বর ২০২৩

সরকার এবং দল হিসাবে আওয়ামী লীগ এসময়ে হিন্দু তথা সংখ্যালঘুদের মাথায় হাত বোলাতে শুরু করেছেন। তারা ইতিমধ্যে দেশে বেশ ক’বার হিন্দু নেতা, এবং প্রবাসে ঐক্য পরিষদের সাথে বৈঠক করেছেন। যদিও ফলাফল ‘শূন্য’। গত দেড় দশক সরকার ও আওয়ামী লীগ হিন্দুর কথা বেমালুম ভুলে থেকেছেন। এখন ভোট আসছে, এবার হয়তো ভোটের দরকার হবে, তাই মাথায় হাত বোলানো। এতে কি কাজ হবে? এবার কি শুধু কথায় চিড়ে ভিজবে, না ২০১৮’র অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে? 

হিন্দুরা কি তাহলে এবার আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে না? পাল্টা প্রশ্ন করা যায়, কেন দেবে? হিন্দুরা তাহলে কাকে ভোট দেবে? ভোটের চিত্রটি ভিন্ন, আগে হিন্দুরা ১শ’ শতাংশ নৌকাকে ভোট দিয়েছে, সত্তরে হিন্দুরা ১শ’ শতাংশ ভোট নৌকায় দিয়েছিল বলেই বঙ্গবন্ধু একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল, দেশ স্বাধীন হয়েছিল। পঁচাত্তরের পর আওয়ামী লীগের উত্থানে হিন্দুদের অবদান, এমনকি ২০০৮-এ ক্ষমতায় আনতে হিন্দুরা জীবনপণ করেছিল। বিনিময়ে হিন্দুদের ‘কলা’ দেখানো হয়েছে। 

১৩ই অক্টোবর ২০২৩ দৈনিক প্রথম আলো হেডিং করেছে, ‘সংখ্যালঘু নেতাদের সাথে সমঝোতার চেষ্টায় আওয়ামী লীগ, লক্ষ্য ভোট’। ক’দিন আগে ঐক্য পরিষদের অনশন ভাঙ্গাতে আওয়ামী লীগ ‘সংখ্যালঘু কমিশন’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো, আপাতত: সরকার এনিয়ে চুপচাপ। ওয়াশিংটনে হিন্দু নেতারা  আবারো ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ দাবি করেন। মনে হয়, অন্তত: এ দু’টো দাবি পূরণ না হলে এবার আওয়ামী লীগ হিন্দুদের তেমনটা পাশে পাবে না।  

তাহলে হিন্দুরা কোনদিকে যাবে? হিন্দুরা সাম্প্রদায়িক দলের দিকে যাবে না, আওয়ামী লীগ এখন আর অ-সাম্প্রদায়িক দল নয়, তবু মাঝে মধ্যে কেউ কেউ মুখে অসাম্প্রদায়িকতার কথা ভুলে বলে ফেলেন, বেকুব হিন্দু তাতেই খুশি? হিন্দুরা এখন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এবার নির্বাচনে অসংখ্য হিন্দু প্রার্থী থাকবে। আওয়ামী লীগের ২১জন সংখ্যালঘু এমপি হিন্দুদের নিরাশ করেছেন। এজন্যে ক’দিন আগে রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, ২১ জন সাংসদ কিছুই করলেন না! 

সিইসি বলেছেন, সংখ্যালঘুরা রাজনৈতিক দলের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। কথাটি সত্য। জাতীয় পার্টির জিএম কাদের বলেছেন, সরকার জড়িত বলেই সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার হয় না। হিন্দুরা মূলত: শান্তি চায়, সরকার তা দিতে ব্যর্থ। ‘ইসলাম ধর্ম অবমাননা’ এবং হিন্দুদের ওপর আক্রমণ, জেল-জুলুম ঘটনায় হিন্দুরা তিতি- বিরক্ত। ডিএসএ বা অধুনা সিএসএ (সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট) হিন্দুদের বিরুদ্ধে ব্ল্যাসফেমি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ইকবালের কারণে ১৮টি জেলায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস হয়, তাঁর হয়েছে ১৪ মাসের জেল এবং রাকেশ রায়, যিনি ভিকটিম, তার হয়েছে ১১বছরের জেল? এথেকে দেশের বিচার ব্যবস্থার দৈন্যতা এবং হিন্দুর প্রতি ভালবাসা টের পাওয়া যায়! 

বর্তমানে হিন্দুদের ‘ভিক্ষা চাইনা, কুত্তা সামলান’ অবস্থা। আওয়ামী লীগের ভালবাসা হিন্দুদের আর দরকার নেই! পূর্ব-পাকিস্তান আমলে হিন্দুরা প্রতিকূল অবস্থায় বাস করতো, কারণ সরকার, রাজনৈতিক দল সবাই ছিল অ্যান্টি হিন্দু। ভরসা ছিলো বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ, বাম দলগুলো এবং কিছু ভালো মানুষ। এখন বঙ্গবন্ধুও নেই, নেই সেই আওয়ামী লীগ বা বামেরা, প্রশাসন, রাষ্ট্রযন্ত্র, হুজুর ও ধর্ম ব্যবসায়ীরা সবাই অ্যান্টি সংখ্যালঘু, ভালো মানুষ  কোথায়? হিন্দুদের অবস্থা এখন পাকিস্তান আমলের চেয়েও খারাপ। এই অবস্থায় ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা’ এবং নিজের পায়ে দাঁড়ানো ছাড়া সংখ্যালঘু’র সামনে অন্য কোন পথ খোলা নেই?    

 

ভারত কখনও হিন্দুদের জন্যে কিছু করেনি। আওয়ামী লীগ হিন্দুদের জন্যে কিছু করেনি। এই দুই শক্তির ওপর ভরসা করে হিন্দুরা বারবার ঠকেছে, হয়তো ঠকে ঠকে শিখেছে, ‘বলং বলং বাহু বলং’। বাংলাদেশের দুই কোটি হিন্দুকে বঙ্গবন্ধুর ভাষায়, ‘দাবায়ে রাখতে পারবা না’! বাংলাদেশে গণতন্ত্র, প্রগতিশীলতা বজায় রাখতে, বা উগ্রতা ও ইসলামী মৌলবাদ ঠেকাতে সংখ্যালঘুরা ‘ডিটারেন্ট ফ্যাক্টর’; দেশ ও সমাজের কল্যাণে এই গোষ্ঠীর টিকে থাকা দরকার। মৌলবাদীরা তা জানে, তাই তারা হিন্দুদের খেদাতে চায়, অথচ তথাকথিত প্রগতিশীলরা জেনেশুনে ‘নিজের পায়ে কুড়ুল’ মারতে উদ্যত!! 

(৩) কর্পোরেট বুদ্ধিজীবী’

 ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, নিউইয়র্ক।

বেশ কিছুকাল আগে একটি পোস্টার দেখেছিলাম, যাতে লেখা ছিল, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী, তোমরা শান্তিতে ঘুমাও, আমরা জেগে আছি’। ১৪ই ডিসেম্বর ১৯৭১-এ পাকিস্তানী বর্বর সেনাবাহিনী ও রাজাকাররা যে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল, ৫২ বছর পর তাঁদের উদ্দেশ্য বাঙ্গালীরা সফল করে দিয়েছে। না, হত্যা করে নয়, ফ্ল্যাট, প্লট, পুরস্কার, টুকটাক পদ-পদবি দিয়ে। এ ঘটনায় প্রমাণিত হয় যে, বাঙ্গালীরা পাকিস্তানীদের চেয়ে যথেষ্ট স্মার্ট। ২০২৩-এ বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রাক্কালে তাই হয়তো জোর দিয়েই বলা যায়, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা তো ঘুমিয়ে আছেনই, জীবিত বুদ্ধিজীবীরাও কুম্ভকর্ণের  মত ‘মরণ ঘুম ঘুমাচ্ছেন।

দেশে বুদ্ধিজীবীরা মোটামুটি দুই ভাগে বিভক্ত, আওয়ামী-পন্থী এবং বিএনপি-পন্থী। অনেকে আবার এদের প্রগতিশীল ও প্রতিক্রিয়াশীল বলতে পছন্দ করেন। এর বাইরে হাতে গোনা কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন, যারা নিজেদের নিরপেক্ষ ভাবতে পছন্দ করেন, অথচ তাঁরা চীনপন্থি, অ্যান্টি ভারত, বঙ্গবন্ধু বিরোধী এবং ভোট দেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ! অধুনা ভোটের জন্যে ওদের আর দায়ী করা যায় না, কারণ ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই? বিএনপি-পন্থী বুদ্ধিজীবীরা এখন দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে সোচ্চার, পক্ষান্তরে আওয়ামী-পন্থীরা চুপচাপ, তাঁরা চান আওয়ামী লীগ যেনতেন উপায়ে থাকুক।

এ সময়ে দেশ বেশ সঙ্কটে আছে, বুদ্ধিজীবীরা ভাবছেন, শেখ হাসিনা ‘আলাদীনের চেরাগ’ দিয়ে সবকিছু ঠিকঠাক করে দেবেন এবং পুনরায় তোষামোদি সেরে সুখ-নিদ্রায় যেতে পারবেন। ভরসা শেখ হাসিনা। তাদের যে একটি দায়িত্ব ছিল সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করে সঠিক পথ দেখানো তাঁরা তা বেমালুম ভুলে থেকেছেন, কি আর করা ‘হাত পাতলে তো কিছু বলা যায় না। এরা এখনো ‘তোষামোদে’ ব্যস্ত। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ‘তৈল’ প্রবন্ধ হয়ত এদের জন্যই লেখা! এতে ভারত খুশী, কারণ তেলের রফতানি বেড়েছে। বাংলাদেশে এখন স্বাধীনচেতা বুদ্ধিজীবী নেই, প্রায় সবাই ‘কর্পোরেট বুদ্ধিজীবী’।

প্রধানমন্ত্রী ক’দিন আগে কিছু বুদ্ধিজীবীকে ‘আঁতেল’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। আসলে দেশে প্রায় সব বুদ্ধিজীবীই আঁতেল। সত্যিকার বুদ্ধিজীবী কৈ? দেশে রাজনৈতিক নেতা নেই, প্রায় সবাই ধামাধরা, ছা-পোষা। দেশে শিল্প-শিল্পী কোনটাই নেই, সাংস্কৃতিক আন্দোলন নেই, এমনকি পেঁয়াজ পর্যন্ত নেই!! ‘সব শালা কবি হতে চায়’-কবিতার সাথে সুর মিলিয়ে বলা যায় ‘শিল্পী-খেলোয়াড় সব শালা এমপি হতে চায়? যাত্রা নেই, পালাগান নেই, নাটক নেই, সিনেমা নেই, এমনকি ভালোমানুষ পর্যন্ত নেই (সামান্য কিছু হয়ত আছেন)।

এই নাই-নাই’য়ের মধ্যে বুদ্ধিজীবী কি আকাশ থেকে পড়বে? বুদ্ধিজীবীরা এই সমাজেরই মানুষ, সমাজ যেমন, রাষ্ট্র যেমন, বুদ্ধিজীবীও তেমনই হবার কথা! যাহোক, দেশে আর কিছু থাকুক বা না-থাকুক, বুদ্ধিজীবী থাকুক বা না থাকুক, ‘ধর্ম’ আছে!!