Center For Research In Indo

বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদের কৈশোর কাল (১৯৮০–৯০)

Dr. Kakoli Sarkar

১৯৮০ থেকে ১৯৯০ এই সময়টিকে আমি বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদের কৈশোর কাল রূপে আখ্যায়িত করলাম, কারণ বাংলাদেশে এই ইসলামী মৌলবাদের বীজ বপন করা হয়েছিল ১৯৭৫ সালে মজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে। ১৯৭৬ সালে ৩রা মে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান এক অধ্যাদেশ জারি করে বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৮ নং অনুচ্ছেদ বাতিলের মাধ্যমে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার ভিত স্থাপন করেন এবং এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে ইসলামী মৌলবাদের শৈশবকাল পূর্ণতা পায় আর তা কৈশোরে পদার্পণ করে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৩৮ নং ধারায় সাম্প্রদায়িক ধর্মভিত্তিক দলসমূহের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ১৯৭৬ সালর ৩রা মে জিয়াউর রহমান ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল সমূহ কে আহবান করে বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদের পথটি মসৃণ করলেন। এরপর থেকে তার বেড়ে ওঠার পালা, যার রসদ যোগাতে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান সর্বদা তৎপর ছিলেন। এই ধারাবাহিকতায় আমরা দেখি ১৯৭৮ সালের ১১ই জুলাই কুখ্যাত রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী এবং ধর্মগুরু গোলাম আজম পাকিস্তানি পাসপোর্টে তিন মাসের ভিসায় ঢাকায় আসেন এবং তার ভিসা শেষ হয়ে যাবার পর অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থানের ব্যাপারে প্রশাসন নীরব থাকে। এই গোলাম আযম জামাতে ইসলামী দলের আমির হয়ে সমস্ত কর্ম পরিচালনা করতেন।

     জিয়াউর রহমানের শাসনকাল চলে ৩০শে মে ১৯৮১ পর্যন্ত, কারণ ওই দিন তিনি সামরিক বাহিনীর ৬ জন কর্মচারীর দ্বারা ব্রাশ ফায়ারে নিহত হন। জিয়াউর রহমান ইসলামী মৌলবাদের পক্ষে যে কাজগুলি করেছেন তা সুদূরপ্রসারী, সেই কারণে অতি সংক্ষেপে দু একটি কথা না বললেই নয়। তিনি সংবিধানের শিরোনামের নিচে যুক্ত করলেন, “বিসমিল্লাহির রহমানের রহিম”। তিনি বাঙালি জাতীয়তার পরিবর্তে নিয়ে এলেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মধ্যে যে পার্থক্য আছে তা হয়তো খালি চোখে স্পষ্ট রূপে ধরা পড়ে না। কিন্তু এখানে একটি গভীর পার্থক্য লক্ষণীয়। বাঙালি জাতীয়তাবাদ তৈরি হয়েছিল ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে, আর বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মধ্যে যুক্ত করা হয় ধর্ম। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ব্যাখ্যায় বলা হয়, বাংলাদেশের নাগরিকদের অন্যান্য ঐতিহ্যের সাথে এ কথাও মনে রাখতে হবে যে তাদের ধর্ম ইসলাম এবং জীবনের সর্বত্র সর্বাগ্রে ইসলামকে স্থান দিতে হবে। জিয়াউর রহমান “জয় বাংলা” স্লোগানের পরিবর্তে নতুন স্লোগান তৈরি করেন “বাংলাদেশ জিন্দাবাদ” (পাকিস্তান জিন্দাবাদের অনুকরণে)। “আমার সোনার বাংলা”র পরিবর্তে নিয়ে আসেন “প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ”। এই প্রসঙ্গে একটু স্মৃতিচারণ করছি–

     আমি যখন তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি, সালটি হবে আনুমানিক ১৯৮৪ বা ১৯৮৫ তখন আমাদের স্কুলে “প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ” গানটি শেখানো হয়েছিল, আমরা জানতাম গানটির রচয়িতা জিয়াউর রহমান। স্কুলে জাতীয় সংগীত “আমার সোনার বাংলা” গাওয়া হতো এবং কিছু ছাত্র-ছাত্রী জাতীয় সংগীত বিকৃত করে মজা পেত। জাতীয় সংগীত বিকৃত করে মজা করা একটা স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে উঠেছিল। আমাদের কাছে কিছু মাত্র আশ্চর্য লাগতো না। স্কুলে প্রার্থনার শুরুতে কোরআন পাঠ হতো, সে সময় আমরা হিন্দু ছাত্র-ছাত্রীরা চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতাম। তখন বাংলাদেশে দু একটি স্কুলে কোরআন পাঠের পরে গীতা পাঠ করা হতো, কিন্তু আমাদের স্কুলে গীতা পাঠ হতো না, কেবল কোরআন পাঠই হতো। জিয়াউর রহমানের সময় থেকে ধর্মীয় মৌলবাদ কিভাবে সাধারণ মানুষের জীবনে ঢুকিয়ে দেওয়া হল সেই আলোচনায় প্রবেশ করার পূর্বে স্কুলের শিক্ষার ব্যাপারে আর দু একটি বাক্য উল্লেখ করতে চাই। আমাদের পাঠ্য বইতে জিয়াউর রহমানের ছবি ছিল এবং বলা ছিল তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, (পরবর্তীকালে হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদের ছবি এবং জীবনীও পাঠ্যপুস্তকে যোগ হয়)। শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বা তাঁর নাম পাঠ্যপুস্তকে কোথাও ছিল না। আমার ছোটবেলা থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে শোনা গল্প এবং বইয়ের বক্তব্য কখনো মিলতো না, মনে অসংখ্য প্রশ্ন দেখা দিত। প্রশ্ন করলে মা বলতেন, “দেশটা ভালো নেই, এসব কথা বাইরে বলবে না”।তাই কখনো বাইরে কাউকে প্রশ্ন করিনি।

      এবার মূল প্রসঙ্গে আসি, ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ দশকে ইসলামী মৌলবাদ কিভাবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জীবনে ঢুকিয়ে দেওয়া হলো। এখানে সেনাবাহিনী একটা বড় ভূমিকা পালন করেছে। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান এবং তার যথার্থ উত্তরসূরী হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ পাকিস্তান মডেল অনুসরণ করে সামরিক বাহিনীকে বিপুল ক্ষমতার অধিকারী করে তোলেন এবং রাজনৈতিক নেতাদের হেয় প্রতিপন্ন করেন। রাষ্ট্রীয় জীবনের বহু ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। খুব ছোটবেলার আর একটি স্মৃতিচারণ–

        পাশের বাড়ির কাকিমা যাচ্ছিলেন কোনো কাজে। রাস্তায় মেলেটারি তাকে ধরে পেটে আলকাতরা লাগিয়ে দেয়। কাকিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, শাড়ির ফাঁক দিয়ে তার পেট দেখা যাচ্ছিল। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান সামরিক বাহিনীর মূলমন্ত্র করেছিলেন তিনটি শব্দ – “তাকওয়া”, “জিহাদ” এবং “ফি সাবিলিল্লাহ”। কারণ সৈনিক ও ছোট অফিসারদের ক্ষেত্রে মতাদর্শের বিষয়টি খুব জরুরী, কেননা তাদেরকেই নিজ দেশের জনগণের উপর নিপীড়ন– নির্যাতন করতে হয়। সেজন্য তাদের মনে এক ধরনের বিকার তৈরি করা হয়।

       কেবল সামরিক বাহিনীর মধ্যেই নয়, সাধারণ মানুষের মনও ধর্ম দিয়ে অতি সহজে বশীভূত করা যায়। তাছাড়া তাদের আরেকটি বড় লাভ হল তাদের বিরুদ্ধে যে কোন আন্দোলন হলেই তারা প্রচার করতে পারবে ইসলাম বিপন্ন। তাই তারা সমাজের রন্ধে রন্ধে ইসলাম স্থাপনের ঠেকা নিলেন।

     জিয়াউর রহমানের পর জেনারেল এরশাদ (১৯৮৩–১৯৯০) যথেচ্ছ ভাবে ধর্মকে ব্যবহার করেছিলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের বোঝানো হয় যে, তিনি ধর্ম অন্ত প্রাণ, যাতে তার সমস্ত অন্যায় বা বেআইনি কাজকর্ম ঢাকা পড়ে যায়। জিয়াউর রহমান যেমন সামরিক শাসক হিসেবে বেআইনিভাবে নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান তৈরি করেছিলেন জেনারেল এরশাদও তেমনি বেআইনিভাবে নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধানের আসনে অধিষ্ঠিত করেন। ফলে মানুষের মনে জায়গা পেতে গেলে ধর্ম হল সহজ রাস্তা, যেখানে অধিকাংশ মানুষ অল্প শিক্ষিত। জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রায় প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যেতেন এবং বলতেন যে, তিনি স্বপ্নে দেখেছেন এখানে নামাজ পড়ছেন।– এটি প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এছাড়া পীরদের দুয়ারে দুয়ারে ধর্না দিতে থাকেন। বিশেষ করে ফরিদপুরের আটরশির পীর। আমরা ছোটবেলা এরশাদের দৌলতে এই পীরের নাম বহুবার শুনেছি। শুনতে শুনতে বিশ্বাস করতাম সেই পীর একজন অলৌকিক শক্তি সম্পন্ন ঈশ্বর প্রেরিত দূত। পীরের যেমন ব্যবসা বৃদ্ধি পায় তেমনি ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। এইসব পীররা চাকরি-বাকরি, প্রমোশন, ব্যবসা প্রভৃতি কাজে মাধ্যম হয়ে উঠেছিল। ধর্মব্যবসায়ীরা এরশাদের নিকট থেকে প্রভূত সম্পদ লাভ করেছিল। যেমন সায়দাবাদের জনৈক পীর সাহেবকে এক টাকা সেলামির বিনিময়ে এরশাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান জমি লিখে দেন। এরশাদের সময় থেকে মসজিদ স্থানে দানের পরিমাণ বহু বেড়ে যায় এবং জুমার দিনে মসজিদে মসজিদে ভিড় উপড়ে পড়ে। তাই কুখ্যাত রাজাকার, পাকিস্তানি দোসর আব্দুল মান্নান মাদ্রাসা শিক্ষকদের একত্রিত করে এরশাদকে জোরালো সমর্থন করেছিলেন। অর্থ এবং সুযোগ সুবিধার বিনিময়ে এরশাদ মাদ্রাসা শিক্ষক এবং মৌলবাদীদের কিনে নিয়েছিল। মাদ্রাসা শিক্ষক এবং মৌলবাদীরা ওয়াজ মাহফিলে প্রগতি বিরোধী বক্তব্য নিয়মিত শোনাতে থাকে। একথাও বলা হতো নারী নেতৃত্ব নাজায়েজ।

      আমার ছোটবেলায় দেখেছি রোজার দিনে খাবারের দোকানপাট বন্ধ থাকতো। এরশাদই প্রথম এই ফরমান দিয়েছিলেন। তাছাড়া এরশাদের আরেকটি নতুন ফরমান আমি নিজে পালন করেছি, তা হলো স্কার্ফ পরে স্কুলে যাওয়া। আমাদের সময় শহর অঞ্চলে মেয়েদের স্কার্ফ পড়ে স্কুলে যাওয়া ছিল বাধ্যতামূলক, আর গ্রাম অঞ্চলে প্রচলন হয় বোরকা। বহু মুসলমান ভাবতে শুরু করে তারা সাময়িকভাবে ধর্ম ভুলে গিয়ে অপরাধ করেছে। ফলে তারা বেশি করে ধর্মকে আকড়ে ধরতে চেষ্টা করে। নামাজ রোজাতে সামান্য বিচ্যুতি ঘটলে তারা অপরাধবোধে ভোগে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান ধর্মকে আঁকড়ে ধরতে গিয়ে নিয়তিবাদী হয়ে ওঠে। এরশাদ আমলে প্রথম টেলিভিশনে আজান প্রচারিত হতে থাকে। রোববারের বদলে শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। ওই সময়ই বিভিন্ন পত্রিকা শুক্রবারে ধর্মীয় সম্পাদকীয় এবং ধর্ম সম্পর্কিত একটি বিশেষ পৃষ্ঠার আয়োজন করে। এরশাদ আমল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের বেশিরভাগ পত্র–পত্রিকার মালিক মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি বা বিএনপি জামাত শিবির। এগুলি করা হয়েছিল অনেক ভেবে চিন্তে। তবে এতসব কিছুর মধ্যে ইসলামী মৌলবাদরে পক্ষে এরশাদের সব থেকে বড় পদক্ষেপ ছিল অষ্টম সংশোধনী। এর দুটি দিক– ১) হাইকোর্ট বিকেন্দ্রায়নের যে প্রশাসনিক নীতি বা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল, ১০০ অনুচ্ছেদে পাঁচটি নতুন দফা সংযোজন করে তা সংবিধানের অন্তর্গত করা হয়। এবং

                                ২) রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে ইসলামকে ঘোষণা করা

প্রথমটির উদ্দেশ্য ছিল সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন, কিন্তু দ্বিতীয়টির উদ্দেশ্য অতি ভয়ংকর। এর মাধ্যমে এরশাদ ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলির কাছে বার্তা দিলেন যে সরকারী মদদ তারা সব সময়ই পাবে। ফলে ইসলামী মৌলবাদী দলগুলি উৎসাহিত হলো এবং দেশের জনগণ উপলব্ধি করল যে, দেশে ইসলামকে সর্বদা গুরুত্ব দিতে হবে। এই ঘটনা অমুসলিমদের মনে নিদারুণ ক্ষতের সৃষ্টি করে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে ইসলামী মৌলবাদের কৈশোর কাল পূর্ণতা পেল আর যৌবনে যাবার রাস্তা প্রস্তুত হলো। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সংবিধান যেন এরশাদের একটা খেলার সামগ্রী ছিল, তিনি যে ঠিক কতবার সংশোধনী এনেছেন তা হয়তো নিজেই বলতে পারবেন না। এরশাদ বাংলাদেশের সংবিধানের স্বরূপটিই নষ্ট করে দিয়েছেন। এই সংশোধনীর পর এরশাদের বিরুদ্ধে জোরালো গণআন্দোলন শুরু হয়। “স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক” এই স্লোগানে ছাত্রসমাজ মুখরিত হয়ে ওঠে। ছাত্র সমাজের এই গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলনে যোগ দেন শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়া। আন্দোলনকে ভিন্ন পথে ঘুরাবার জন্য ৩১ শে অক্টোবর ১৯৯০ চাঁটগায়ে মন্দির এবং হিন্দুদের ঘরবাড়ি আক্রমণ শুরু হলো। তারপর আগুন দেয়া হলো ঢাকার ঢাকেশ্বরী ও জয়কালী মন্দিরে। তবে একটি বিষয় লক্ষ্যণীয়, তৎকালীন  সিভিল সমাজ বা নাগরিক সমাজ ব্যাপকভাবে সেই আক্রমণ প্রতিহত করেছিল, যার ফলে তা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারেনি। কিন্তু এত কিছুর পরও এরশাদের শেষ রক্ষা হলো না। ডিসেম্বরের ছয় তারিখ তার সরকারের পতন হলো। সামরিক শাসক উৎখাত হল, তার দেওয়া ধারণাগুলি কিন্তু রয়ে গেল। এরশাদ বাংলাদেশের মানুষকে যে নিয়তিবাদী, ধর্মভীরু করে গেলেন তার থেকে মানুষের পরিত্রাণের কোনো রাস্তা সিভিল সমাজ দেখাতে পারেনি, আর রাজনৈতিক দলগুলি তার চেষ্টাই করেনি।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *